Thursday, September 13, 2018

একগুচ্ছ কবিতা শোভন মণ্ডল








যখন জ্বর আসে
            

সামান্য জ্বর এলে আলজিভে ফোসকা পড়ে
বেহালা বাজাইনা আর
আপেল গাছের নিচে দু'দন্ড জিরোই
সামনের সাদা পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে কফিমগে চুমুক দিই
রোমাঞ্চকর একটা ট্রেন পেরিয়ে যাবার পর
হুইস্কির বোতলে বুদবুদ ওঠে

এরপরও তুমুল ঘোরে তোমার নাম মুখে এলে
নতুন করে আমি আবার আমাকে বোঝাই


 শর্তসমগ্র
                         
শীতের বিকেল আর ধোঁয়া ওঠা কফিমগ এভাবে আমাকে বসিয়ে রেখেছে
তুমি তো মেঘের ডানা ছুঁয়ে আছো, আমি দেখছি স্পষ্টতই
গোলাপ বাগানে লেগে আছে আমাদের বিচ্ছেদ-দাগ
পোড়ো কারখানায় এই তো রয়ে গেছে আগাছা জঙ্গল, আমাদের চুম্বন-স্বাক্ষী
ভিজে দেশলাইবাক্সে যে সকল শলাকা এখনো উন্মুখ
তাদের দোষ নিইনা, এভাবেই তারা বেঁচে উঠবে একদিন
রাত বাড়লে শেষ বিমানের আলো এসে পড়ে আমার ঝুলবারান্দায়
বুনো অর্কিডের পরাগ ছড়িয়ে পড়ছে ব্যথার চারপাশে
খনন কার্য ফুরোলে বিছানায় ঝিমিয়ে পড়ে পুরনো আদর
আমি শুধু জানালায় চোখ রেখে ঝালিয়ে নিচ্ছি গল্পের শেষটা

এর বেশি কিছু নাই বা শোনালাম, শুধু জেনে রেখো
চলে যাবার আগে তুমি  খেলার কোনো শর্তই মানোনি

           অন্ধকার সুড়ঙ্গ

 আমি এক অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্যে নিজেকে ভাসিয়ে রেখেছি
নোনতা গন্ধে শিউরে উঠছে সজারুর মতো শরীর
বাইরে যেসব অতি অলৌকিক ঘটনা ঘটছে তার কোন রেখা দৃশ্যমান নয়
থার্মোমিটারের ওঠানামাগুলো নিয়ন্ত্রনে নেই
জাহাজের সাইরেনে ইকো হচ্ছে এখানে
বাদুড়ের র‍্যাডারে ভ্রাম্যমাণ গল্পের উপসংহার লেখা হলো এইমাত্র
একটা পুরনো পাথরের গায়ে লেগে আছে নিথর চোখ
আর দূরবীনেও ধরা যাচ্ছে ষড়যন্ত্রের আভাস

তুমি কি কোন অন্য আগুন নেভানোয় মগ্ন ?
আমাকে এভাবে অন্ধকারে রেখোনা, লক্ষ্মীটি !


 যা কিছু বলার মতো


একটা সাদারঙের কফিমগে দু'জনের ঠোঁট আঁকা আছে
ঘোরানো সিঁড়ির গায়ে কে যেন মুছে দিয়েছেপ্লাস-প্লাসচিহ্ন
জিন্দেগি আজিব দাস্তান ‘ -এই বলে একটা পাগল ট্রাফিক আইন ভেঙে দিচ্ছে
হিটলারের মতো দেখতে একজন মানুষ ফুলের দাম নিয়ে দরাদরি করে যাচ্ছে সেই কখন থেকে
কোন কারন ছাড়াই ভিতরে ভিতরে শহরটা টগবগ করে যেন ফুটছে
এছাড়া ভেবে দেখবার মতো কিছু নেই,  ভেন্টিলেশনে ঘুমিয়ে আছে সমস্ত হিসেব নিকেশ
অন্ধকার থেকে ডানাকাটা একটা পাখি এইমাত্র ঝাঁপিয়ে পড়ছে আগুনের ভেতর
এটাই গুজব হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র


শুধু বলার মতো বিষয় হলো
বিয়ারের দাম কমে যাবার পর আমাদের ভালোবাসা ক্রমশ বাড়ছে



আগুন
সার্কাস দেখতে ভালোবাসতাম

ওই যে জাগলিং
হাতে আগুনের গোলা নিয়ে লোফালুফি খেলা
আমার খুব প্রিয় ছিল

বাড়িতে চেষ্টা করেছি গোপনে
পারিনি

অনেক অনুশীলনের পর আয়ত্তে এসেছে

এখন পারি

আগুন নিয়ে খেলতে পারি সহজে









1 comment:

  1. খুব সুন্দর লাগলো কবিতা গুলি, অনেকের পোড়া হৃদয়কে ছুঁয়ে যাবে|শুভেচ্ছা রইল

    ReplyDelete

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"ইস্কুল বলিতে আমরা যাহা বুঝি সে একটা শিক্ষা দিবার কল। মাস্টার এই কারখানার একটা অংশ। সাড়ে দশটার সময় ঘণ্টা বাজাইয়া কারখানা খোলে। ...