Friday, September 14, 2018

জীবনের পাঠশালায়... - বেবী সাউ







"By education, I mean an all-round drawing out of the best in the Child and man body, mind and spirit."(Gandhi) 

দাদু 

অসংখ্য আলো-বৃষ্টিতে ভিজে থাকত চিরসবুজ মুখ। মুখ ভর্তি  কাঁচাখোঁচা দাড়ি। পরনে ধুতি- পাঞ্জাবি। মুখে মুখে কঠিন কঠিন অঙ্ক। খেলার ছলে আমাদের ভাই-বোনদের স্বপ্ন  দেখাতেন এক আশ্চর্য দেশের-- যে দেশে অনাহার নেই, কুসংস্কার নেই, অধীনতা নেই-- এমনকি নেই কোনও অধিকারও। সবাই হাঁটছে ইচ্ছেমত, বেড়াচ্ছে... আর আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠছে মাঝেমধ্যেই। বেড়া নেই, প্রাচীর নেই-- এমন এক দেশ, বড় হলে আমরা  একমাত্র তৈরি করতে পারি বলে আমার ব্রিটিশ তাড়ানো দাদুর বিশ্বাস ছিল। আর আমরা ভাইবোনেরা দাদুর স্বপ্ন পুরনের আশায় ধীরে ধীরে ছুঁতে আরম্ভ করলাম-- মার্কস, মাও সে তুং। আমাদের দোতলার  বারান্দায় সার সার দিয়ে দাঁড়ানো গান্ধী, নেতাজী, কিটস, গেটে। দাদু হাত ধরে পরিচয় করিয়ে দিতেন। বোঝাতেন, কেন এঁদের ছবি সাজিয়ে ধুপ-ধুনো দেওয়া জরুরি। ঠাকুমার গোপালের চেয়ে এরা কেন অভিক মাত্রায় শ্রেষ্ঠ! আমার তখন, তিন -চার হবে। দাদুর মুখে, নেতাজীর বীরত্বের কথা শুনে, মনে মনে, তাঁকেই পরিয়ে দিলাম আমার পুতুলের বরমাল্য। মনে আশা, হারিয়ে যাওয়া নেতাজী নিশ্চয়ই একদিন ফিরে আসবেন আর আমার পুতুল কাম আমাকে বৌ হিসেবে মেনে নেবেন! যাইহোক, এসব লজ্জার কথা কাকে আর বলা যায়! এই দাদু যখন দেখতেন গ্রীষ্মের দুপুরে কেউ আম চুরি করছে আমাদের বাগান থেকে... পোড়া দেশের জন্য কষ্ট পেতেন খুব। বলতেন, খাবারের অভাব মিটল না যে দেশে, সেদেশের মানুষ এগোনোর স্বপ্ন দেখবে কী করে! আমরা তখন খুব ছোট,  এসব কথা আমাদের মাথায় ঢুকত না... তাও দাদু বলে যেতেন। শোনাতেন। আর আমরা ভাইবোনেরা, দাদুর কষ্ট মুছে দেওয়ার জন্য নিজের খাবারের অংশ থেকে তুলে দিতাম কাঠবিড়ালির মুখে... শালিখ পাখিকে... আমাদের কাজে সাহায্যকারী কুন্তি মাসির ছেলেকে দিতাম নটরাজ পেনসিল।  দাদুর আরেকটি বিরাট  গুণ ছিল,  মুখের ধোঁয়া নাক দিয়ে বের করতে পারতেন। যদিও সবাই বলে,  সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কিন্তু আমার কাছে সপ্তম আশ্চর্যের চেয়ে এটি কম কিছু ছিল না। আর এই সিগারেট খাওয়া  শেখার চেষ্টায় কত যে দুপুর পুকুর পাড়ে একা কাটাতাম! উফ! কিন্তু কিছুতেই সফল হতে পারিনি। কিন্তু বিফল হলেও চেষ্টার তো আর কোনও পরাজয় নেই! ( আর পুরস্কার স্বরূপ জুটেছিল মায়ের প্রহার এবং দাদুর চিরদিনের মতো সিগারেট ছেড়ে দেওয়া)। প্রথম এক এক্কে এক শেখা, অঙ্কের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হয়, কেমন ভাবে ঘড়ির কাঁটাকে-- সবটাই দাদুর দান। আমরা ধীরে ধীরে স্বপ্নের পৃথিবীর দিকে এগোতে লাগলাম আর দাদু ক্রমশ অন্ধকার হতাশার দিকে... শেষে একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখি, দাদু বিরাট এক রজনীগন্ধার মালা পরে শুয়ে আছেন... যাত্রাপথে ছড়ানো খই আর আধুলি... নতুন পৃথিবীর খোঁজে! 


ঠাম্মা 

 ধূপের গন্ধে গায়ত্রী মন্ত্র আর লাল পাড়ের আঁচলে বেঁধে রাখা রোদ ছেড়ে দিলেই শুরু হতো আমাদের বাড়িতে সকালের আলো। ততদিনে জেনেছি, ঠাকুমাই হলেন গায়ত্রী মন্ত্রের রচয়িতা। ভাইবোনদের সে কথা জানিয়েছিও। আর ঠাকুমাকে রবীন্দ্রনাথ ভেবে আমরা ভাবতাম, এই ঊষার আলোয় আমরাও একদিন নিজেকে কবি করে তুলবো। সেই মন্ত্রের হাত ধরে  আমরা ভাইবোনেরা হাঁটিহাঁটি পা পা করে বেরিয়ে এসেছি কতকাল অন্ধকারের ঘর থেকে। অসংখ্য লোকগান, প্রচলিত ধাঁধা, রূপকথার সম্ভার ছিল তাঁর কাছে। ছিল তেরো হাতা শশার চোদ্দ হাতা বীজ। আর ছিল গোপাল, জ্যান্ত এবং রূপোর। জ্যান্ত গোপালরা, দুপুরে কীর্তন করতে করতে আমাদের বাড়িতে আসতেন, রোদেপোড়া কালো গায়ের রঙ, ঘেমো গন্ধ, ধুলো ভর্তি পা( কিছুতেই মেলাতে পারতাম না চকচকে রূপোর গোপালের সঙ্গে, তাও ঠাকুমার যুক্তি ছিল, এরাই আসল গোপাল। ছন্দবেশে এসেছেন পরীক্ষা নিতে)-- ঠাকুমা, দেবী অন্নপূর্ণার মতো বাড়িয়ে দিতেন দই, চিড়ে, গুড়। আর রূপোর গোপাল চুপচাপ শুনতেন অভুক্ত মানুষের খাবার গ্রহণের শব্দ, তৃপ্তির শব্দ। শুনতেন, ঠাকুমার মনখারাপ-- সবাইকে ভালো রাখার প্রার্থনা। দুপুরের ভাত খাওয়ার পরে বসত ঠাকুমার রামায়ণের আসর। পাড়ার অনেকে আসতেন। সুর করে, ঠাকুমা পড়তেন-- 

"সীতার বচন যে শুনিল সর্ব্বলোক।
লজ্জায় কাতরা সীতা পৃথিবীকে ডাকে।।
মা হইয়া পৃথিবী মায়ের কর কাজ।
এ ঝিয়ের লাজ হৈলে তোমার যে লাজ।।
কত দুঃখ সহে মাগো আমার পরাণে।
সেবা করি থাকি সদা তোমার চরণে।।
উদরে ধরিলে মোরে তা কি মনে নাই।
তোমার চরণে সীতা কিছু মাগে ঠাঁই।।
করিলেন সীতা পৃথিবীকে এই স্তুতি।
সপ্ত পাতালেতে থাকি শুনে বসুমতী।।
সীতা নিতে পৃথিবী করিল আগুসার।
সপ্ত পাতাল হইতে হইল এক দ্বার।।"

 তখনই ঘৃণার ভরে উঠত আমার হৃদয়। কষ্ট। সেদিন থেকে কখনোই রাম আমার কাছে দেবতা হয়ে উঠতে পারলেন না। 

আমাদের প্রতিদিনকার ঘর জুড়ে তখন উত্সব , ঝরঝর আনন্দ উঠোনে ঘুরপাক খেত সারাদিন। বুঝতে পারতাম, সুখ আসে সবার কাছ থেকে, সবার কাছ থেকে। একা একা কিছু হয় না। একা একা থাকলে লোভ বাড়ে, প্রাচুর্য বাড়ে কিন্তু শান্তি নেই। আর এখনো ওই হইচই পোষা  আমাদের মনে। আনন্দ কী একেই নাম ধরে ডাকে!

 "Education which will offer the tools whereby one can live for the divine, for the country, for oneself and for others and this must be the ideal of every school which calls itself national"( Sri Aurobindo) 

বাবা 

বিকেলে আমাদের কোন খেলার মাঠ ছিল না। ছিল না ছুটে ছুটে ছুঁতে যাওয়া দিগন্তের রামধনু। এই মাঠের নেশা, এই নীলের পেছনে ছোটা... এগুলোর অভাব বোধ হয় নি একটি হাতের জন্য। সঠিকভাবে বলতে গেলে, হাত নয়... একটি আঙুলের জন্য। তর্জনী। আর ওটার মালিক আমার বাবা, বাবা আমার। ওই আঙুলে ছিল প্রজাপতি হওয়ার ইচ্ছে। কখনও পরী হয়ে যেতাম তুলতুলে। সবটুকু পৃথিবী তখন আদরে হাসত।

 আমার বাবা, ঠিক আমার বাবার মতোই। সবাইকে "তুমি" বলা বাবা। কাউকে "না " না বলা বাবা। আর আমার বন্ধুদের চোখে, আমার উত্তমকুমার উত্তমকুমার বাবা। অঙ্কে স্কলারশিপ বাবা, জীবন অঙ্কে বড্ডই বেমানান। কিছুতেই মেলাতে পারেন না, বেতনের টাকা। কিছুতেই মেলে না কীভাবে জমা অঙ্কের রাশি শূন্য হয়ে যায় অজান্তেই...। মায়ের অভিযোগে, বলতে শুনি-- " জীবনে কী হবে ভেবে, এখন থেকে টাকা জমিয়ে রাখবো! " আর তারপরেই প্রাণখোলা হাসি....

 আমাকে প্রতিটি রেজাল্টের পর ধরিয়ে দিতেন একটি নীল রঙের ডাইরী। আমিও এক একটা ডাইরী জমাই , আর টপকে টপকে যাই এক একটা সিঁড়িভাঙা অঙ্ক। নতুন পৃথিবী, নতুন বন্ধু আর অনেক অনেক নতুন পেতে পেতে অনুভব করি তোর হাতের। সে হাত যখন ঠিক আমার হাত ধরায় জন্যে নয়, সমস্ত কথা ভারী হয়ে থাকে বুকে। হঠাৎই  মোবাইলে রিংটোন বাজে, পাখি জন্ম আমার। দূর থেকে বাবার কথা ভাসে," মা-রে, আজ এখানে খুব বৃষ্টি। আজ ধানের ক্ষেতে কিছু টিয়া এসে বসেছিল। আজ ...আজ..."। সবটুকু বর্তমান ফিরে আসে। আমি লুটোপুটি হয়ে বলি কলেজের কথা, বান্ধবীর কথা---অসংখ্য মনখারাপের কথা। তোরও। ফোনের ওপাশ থেকে বাবা হাত বুলিয়ে দেন। কথাগুলো তখন সুর হয়ে ছোটে জুবিলি পার্কের দিকে। সাকচির ব্যস্ততায়। সবটুকু অতীত ভুলে আমি মা হয়ে  উঠি। বাবা তখন একমাত্র সন্তান আমার। 

আবার ছুটি নতুনের দিকে। যখনই  পথ ভ্রমে ভুল করি রাস্তা। একা হতে হতে দেখি, সাদা পাঞ্জাবীর ফাঁক দিয়ে,  পাঁচটা আঙুল দিয়ে গড়া এক হাতের উপস্থিতি। বাবার।  

  আবার হাঁটতে শিখি। পা মেলাই।
 গভীর দীর্ঘশ্বাস থেকে বেরিয়ে দেখি মৃদু প্রশান্তি ডাকছে ' আয় আয় ' করে। আর আমি দিক ভুলে , আলো অন্ধকার যাচাই না করে চোখ শিখছি। শিখছি ভালোবাসার বানান। তর্জনী কখনই অতটা শাসনের নয় , যতটা পথ পেরোনোর জন্যে জরুরী ... সেদিন বুঝেছি । 


"আমি কান পেতে রই..." 

মা 

স্বরবর্ণ আর ব্যঞ্জনের ডিফারেন্স একমাত্র মা -ই জানতেন । ছোট বেলা ভাবতাম মা কে কেন আমাদের স্কুলের প্রিন্সিপাল করা হয় নি !  ভাবতাম , মানুষ এত শেখে কি করে! আমাকে বলতেন, " কেউ তোমার শত্রু নয়, কেউ বন্ধুও নয়। তুমি নিজেই তোমার শত্রু, নিজের মিত্র। তুমিই ঠিক কর কীভাবে হাঁটবে পথে। কীভাবে রাস্তা পার হবে!"
     গুনগু্নে রবীন্দ্রসঙ্গীত আমাদের রান্নাঘরের চালে , আমাদের শ্যাওলা পড়া সিঁড়ির ধাপে। আমাদের বর্ণপরিচয় , আমাদের সহজপাঠ , আমাদের ঊনিশ কুড়ির বয়ঃসন্ধি কাল।আমার সারাটা জীবনের অনুকরণ। 

" Education is the most powerful weapon which you can use to change the world."
 (Nelson Mandela)

কে. কে. সি 

প্রথম বৈষ্ণব পদাবলী স্যারের কাছে। তখন আমার নবম। প্রথম জীবনানন্দ। প্রথম ভালোবাসা বাংলাকে। আর নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে হারিয়ে গিয়েও কী আশ্চর্য এক রানওয়ের গান শিখে ফেলা গোপনে। সিঁড়ি ভাঙার অঙ্ক বাবা শেখালেও, বাংলায় ক্ষত লিখতে শিখেছি তখনই। তখনই দেখতে শেখেছি আলোর সরু
সড়ক। বিষন্ন পথ ধরে হেঁটে যাওয়া বাঁশির ডাক। জলপথের বিষন্ন ফড়িং। 


"কবিতার মুহূর্ত"

ভাষা উড়ছে , গান উড়ছে। প্রজাপতির ডানায় মুঠো মুঠো জীবন। মুঠো মুঠো জন্মকাল। শঙখ ঘোষ কে! আর অনিশ্চয়, অস্থিরতায় কাঁপছে আমার দিন। আমার মুহূর্ত। আমি ছুঁতে চাইছি শব্দকে ভাষাকে... চেনামুখগুলিকে... কে দেখাবে পথ! কে বলে দেবে বিপুল আলোড়ন থেকে কীভাবে শিখে নিতে হয় স্থিরতার সূত্র! 
" এই যে মুহূর্তে, এই যে দাঁড়িয়ে থাকা–এ‌র কোনো অর্থ নেই
ঝর্নার জলে ভেসে যায় সম্রাটের শিরস্ত্রাণ
কমলার কোয়া থেকে খসে পড়া বীজ ঢুকে পড়ে পাতাল গর্ভে
পোল্‌কা ডট্‌ দুটি প্রজাপতি তাদের আপন আপন কাজে ব্যস্ত
বাব্‌‌লা গাছের শুক্‌নো কাঁটাও দাবী করেছে প্রকৃতির প্রতিনিধিত্ব।
সব দৃশ্যই এমন নিরপেক্ষ
আমি জয়ী নই, আমি পরাজিত নই, আমি এমনই একজন মানুষ
পাহাড় চূড়ায় পৃথিবীকে পদতলে রেখে, আমার নাভিমূল
থেকে উঠে আসে বিষন্ন, ক্লান্ত দীর্ঘশ্বাস
এই নির্জনতাই আমার ক্ষমাপ্রার্থী অশ্রুমোচনের মুহূর্ত।" ( জয়ী নই, পরাজিত নই/সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়) 

সকালের গ্রিলে এসে বসছে কালো কাক, দু'টো চড়ুই। বেলা হলে আসেনা তারা। এসে ঠুকঠুক করে আমার ওয়ানসাইডের কাঁচের জানলা... খেতা দাও... যদি দেরী করে ফেলি... অভিমান হয় তাদের! জানলা খুললেই বিস্তৃত দলমা। কখনও সবুজ, ঘন নীল, ধূসর। আবার মনখারাপ হলে, মেঘের আড়ালে হারায় নিজেকে। কিছুক্ষণের মেঘ কেটে গেলে, দেখি টগবগে সবুজে ভরে ওঠে। আত্মগোপন কী তবে নিজেকে জানার মোক্ষম পথ! নিজেকে প্রকাশের আগে ফেরাটা জরুরি নিজের কাছে!

 "তোমাকে বনের মধ্যে ছুটে যাওয়া পথ মনে হয়" ( মৃদুল দাশগুপ্ত) 

এত্তসব নিয়ে হাঁটতে শিখছি , দৌঁড়ে যাচ্ছি , আবার পথ ভুলে সঠিক পথে  আসছি পরমুহূর্তে। কখনও এগিয়ে যাচ্ছি নিজের দিকে ... মোহনীয় আগুনের দিকে। এই জীবনই কি তবে আসল বিদ্যালয়... প্রকৃত শিক্ষক?

তাকিয়ে থাকি সামনের দিকে। একটি ইস্পাতকঠিন শহর। চকচকে রাস্তা। কত মানুষ মেশিনের মতো কাজ করে চলেছেন। কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিচ্ছেন। মনে পড়ে যাচ্ছে বাড়ির পাশেই গজিয়ে ওঠা নতুন বাড়িটার কম্পাউন্ডে ঘামে ভেজা শ্রমিকদের মুখ। মনে পড়ে যাচ্ছে জামশেদপুরের আশেপাশের গ্রাম থেকে আসা মানুষের চোখের বিস্ময়। ঝাড়্গ্রাম থেকে ঝাড়খণ্ডে আসা বাসের ড্রাইভার যখন আমাদের দিয়ে যান গ্রাম থেকে পাঠানো সুস্বাদু কোনো খাবার, তখন তাদের মুখ। মনে পড়ে যাচ্ছে, গ্রামের আলপথে হাঁটতে হাঁটতে সেই দাদুটার মুখ, যার কাছ থেকে জানতে পেরেছি কতকিছুই। এমন সব কত মানুষ, যাদের আমি চিনি না, কিন্তু যাঁরা শহরের পথে চলতে চলতে শিখিয়ে যান কতকিছুই। লোকাল ট্রেন, লোকাল বাস, বেড়াতে আসা দম্পতি, হাসপাতালের করিডোরে দাঁড়িয়ে থাকা উদ্বিগ্ন মুখ, লাইনে অপেক্ষা করা ভারতের সহনশীল নাগরিক...সবাই আমার শিক্ষক। সমস্ত জীবন আসলে পাঠক্রম। আর আমরা চিরকালীন ছাত্র হিসেবে একে অপরের কাছ থেকে শিখে চলেছি। এই শিখে চলা কোনমতেই ফুরোবার নয়। আসলে আমি জানি, আমি কিছুই জানি না। যত শিখি তত বুঝতে পারি, কিছুই জানি না। 

1 comment:

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"ইস্কুল বলিতে আমরা যাহা বুঝি সে একটা শিক্ষা দিবার কল। মাস্টার এই কারখানার একটা অংশ। সাড়ে দশটার সময় ঘণ্টা বাজাইয়া কারখানা খোলে। ...