Monday, September 10, 2018

দুটি কবিতা- পারমিতা ভট্টাচার্য




আয়না


তোমার চোখেই আমি প্রথম দেখেছিলাম,    বর্ষায় ভিজে যাওয়া নদী।

কালিম্পংয়ের হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় তোমার সামনেই বসে ছিলাম।  ফিসফিস করে বললে "তুমি অন্তরঙ্গে যতটা সুন্দর বহিরঙ্গেও ততটা সুন্দর!"  লজ্জায় চোখ তুলে তাকাইনি, অনেকটা গভীরেই ডুব দিয়েছিলাম। মনে আছে! তুমিই তো প্রথম  শিমুলের লাল ঘ্রাণ দিয়েছিলে ! ভেন্টিলেশানে থাকা  হৃদয়ে  শব্দের ফোয়ারা তুলেছো। হাত ধরে ছুট্টে  গিয়েছো কচি ঘাসের জমা জলে, কখনও বা কাশবনে, বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছি স্থির আকাশ। প্রত‍্যয়ের ঘুড়ি!

তোমাকে জড়িয়ে ধরে সেদিন রাতে খুব কেঁদেছিলাম। মুহূর্তে ভিজে গেল তোমার বুক। কোন কথা বলোনি। শুধুই নীরব থেকেছো।

টিপ কাজল পরিয়ে  কিশোরী বেলার মতো  সাজিয়ে রেখেছিলাম তোমাকে। কিন্তু পারলাম কই! হারিয়ে ফেলেছি।  পাহাড়ের বাঁকে না কি সমুদ্রের নোনা দোয়াতে! ব‍্যস্ত রাজপথে না গঙ্গার জোয়ার-ভাঁটার সন্ধিক্ষণে! জানি না ! হারিয়ে ফেলেছি ! 


আশা 


হঠাৎ হঠাৎ এমনই হয় !
গম্ভীর নির্জনতা বিকেলের ফোয়ারার মতো দুলে ওঠে।
রক্ত মাংসের বিষাক্ত গন্ধের কোলাহলে ঝিমুনি আসে।
খুব শীঘ্রই পশ্চিম আকাশে অস্ত যাবে !
টুপ করে নেমে আসে অন্ধকার।
অন্ধকার ! অন‍্য একটি মারিয়ানা খাত।
প্রশান্তির অতলে মুখোমুখি বসে শুধুই দেখা !
         সন্ধ‍্যাতারার অবগাহন !

হঠাৎ হঠাৎ এমনই হয় !
প্রতিদিনের ভিড়ে ছুট্টে যাওয়া,
        আবার ফিরেও আসা।
দশ হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা অস্বচ্ছ অবয়বে রং লাগিয়ে নীল শাড়ি জড়িয়ে দেওয়ার নামই হয়ত
                            আশা !

No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"ইস্কুল বলিতে আমরা যাহা বুঝি সে একটা শিক্ষা দিবার কল। মাস্টার এই কারখানার একটা অংশ। সাড়ে দশটার সময় ঘণ্টা বাজাইয়া কারখানা খোলে। ...