Friday, September 14, 2018

ক্রোড়পত্রের কবিতা- মণিশংকর বিশ্বাস







শ্রীচরণেষু

(স্বর্গীয় শ্রী শিশির রঞ্জন বিশ্বাসের স্মৃতির উদ্দেশে রচিত(

তোমার আলোর কাছে বাকি সব আলো, ম্লান মনে হয়
খনিজ তেলের মতো গভীর গভীর কোনো উন্মাদনা
পার করে এইবেলা দেখি
পিছনের গোধূলি রাঙ্গানো পথ মানে প্রায়শ্চিত্ত
টিলার উপর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি লাফ মারে
শূন্যে অন্ধকারে, ঘাসবনের দিকে...
এরকম উপমায় কিছুতেই যাবে না বোঝা—
তবু তাই স্মরণীয়, যেইটুকু ফুটে ওঠে তোমার ছায়ায়
শ্রেণীকক্ষ, মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের কারণ, চকের গুড়ো,
বিকেল বেলার পথ, সন্ধ্যাতারা...

পিতৃপক্ষ, সশরীরে চাঁদ এসেছে আবার
সুপারি গাছের গায়ে লেগে থাকা  পার্থিব শামুক
অন্ধকার ক্রমে নীরব হয়েছে
আত্মা যা নিঃশব্দে নষ্ট করে, সেই ভূগোল, ইতিহাস, মহাদেশ,
গরম ভাতের মতো শুভ্র কলনবিদ্যা
অকস্মাৎ বাঁক নেয়, ফিরে আসে আশির দশক—
যেন মানব সভ্যতা এইমাত্র পৌঁছে গেল তার উৎকর্ষতম বিন্দু

মনে হয় এইমাত্র তুমি, বিশ্বাসবাড়ির দিকে চলে গেলে
ফাঁকা মাঠের ওপারে থোকা থোকা আবছা হলুদ ফুল
এই ফুলে অশ্রু এসে থমকে দাঁড়ায়
তোমাকে মূলত মেঘ মনে হয়, অংশত সূর্যাস্ত
আর অভিভাবকহীন একটি পাখির মালা
আরো দূরে গিয়ে ছিঁড়ে যায়
তারপর আকাশ নির্জন

শুকনো কাঠেরপরে সদ্যস্নাত দেহ
অমনই গম্ভীর প্রকাশ্য ছিল তোমার শ্রেষ্ঠতা
মোমের আলোর মতো তোমার কৌলীন্য
এই আলো, নব্য আবিষ্কৃত ভূখণ্ডের প্রতি
মানুষের পৌনঃপুনিক অভিযাত্রা,
পুনরায় আবিষ্কার অসম্ভব
ভুল নাবিকের মতো প্রতিদিন তাই
নিজেকেই সৃষ্টি করি,
নিজেকে গণনা করি তোমার আলোতে
অখিল নির্দেশতন্ত্র থেকে একটি প্রচণ্ড চিল
ঝাপ দেয় নিটোল জলের পরে
আর মাঝে মাঝে বালকমনস্ক আমিও সন্দেহ করি

 ঈশ্বর, তোমার পাঠক্রমে


1 comment:

  1. চাকাতে পড়া । খুব সুন্দর #শিবসাগর

    ReplyDelete

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"ইস্কুল বলিতে আমরা যাহা বুঝি সে একটা শিক্ষা দিবার কল। মাস্টার এই কারখানার একটা অংশ। সাড়ে দশটার সময় ঘণ্টা বাজাইয়া কারখানা খোলে। ...