Thursday, September 13, 2018

কবিতা সরিৎ দত্ত







অন্ধকার দেশবাড়ি 




প্রাচীন বাড়িটির কুলুঙ্গি থেকে বেরিয়ে একটা বৃদ্ধ অন্ধকার বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে পরিত্যক্ত পুকুরের জলে । শীতলতা মেখে নেবে যেন । প্রায় । আর তার পিছনেই ধেয়ে আসে জান্তব শৈশব । আঁস্তাকুড় থেকে উঠে আসা । অন্ধকারের ঝুঁটি চেপে ধরে তাকে নিয়ে সেও পৌঁছে যেতে চায় অন্য কোনো পাতালিক ধ্যানের গভীরে । 

বহুকাল পড়ে থাকা এসরাজের ভাঙাসুর ভেসে আসে জীর্ণ নাটমন্দিরের ফাটলের থেকে । ওইখানে ঘুঙুরের শব্দের মতো কিছু নৈঃশব্দ্য । এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে । 

অন্ধকার থেমে যায় । সরে আসে । আত্মহননের প্রবণতা থেকে । 

কিছু কিছু মুখে ঈশ্বর বসতি করে আজও ...


মেঘপ্রস্তাব 

 


এসো । বসি ... কাছাকাছি । কিছুক্ষণ । 
দুএকটি বিষাদকথা বলি । মুখোমুখি । 

তুমি যে মৃত্যু শেখালে , তার কাছে 
সামান্য গান্ধারে ঝুঁকে থাকি । 

এসো । প্রেম , আহা , নিমগ্নতা । 
জল উচ্চারণ করি । বৃষ্টি , বিষাদমেঘ ...

এই বৃদ্ধতার প্রান্তে , মগ্ন আঁচলবোধ ছাড়া , 
আর কী থাকে বলো ? 

বিষাদবয়সী ঠোঁটে জলবিন্দু । তাহাতে তাকাই । 
ওষ্ঠ দর্পণ হয়ে ওঠে...


ছায়াগান 



নরম দুর্বার গন্ধ লেগে থাকে। তার গানে। তাহার সঙ্গীতে।
যে নদী মরিয়া গেছে। স্রোতস্বতী। ছিল সেও। তার আরশিতে।

ছায়া রেখেছিলো গান। স্রোতভরা ছিলো নৌকাসুর।
বিকাল সন্ন্যাসী হলে মেঘ তাকে ডেকে নিতো। দূর।

মেঘেরও ঘুঙুর আছে জানো? কেবল নদীই তাকে জানে।
ছায়া ঘন হয়ে এলে গান হয়ে ভাসে সে উজানে ...


কবিতাজন্ম 


দুঃখের ওপারে কিছু নেই। এই স্থির জেনে
অবশেষে শব্দের কাছে আসি। শব্দবিধি মেনে
কিছু উচ্চারিত গান; কিছু স্রোত কুসুমপ্রবন
দুঃখগান ভাসে জলে। ছায়া ভাসে গানের মতোন

মোটকথা দুঃখ দিলে। দুঃখের ওপারে কিছু নেই
কলম গর্ভিনী হলে কবিতার জন্মকথা এই...






No comments:

Post a Comment

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"ইস্কুল বলিতে আমরা যাহা বুঝি সে একটা শিক্ষা দিবার কল। মাস্টার এই কারখানার একটা অংশ। সাড়ে দশটার সময় ঘণ্টা বাজাইয়া কারখানা খোলে। ...