Friday, September 14, 2018

রাস্তা, আমার শিক্ষক- প্রসূন মজুমদার




 




  কিছুক্ষণ আগে আমাদের স্কুলের কম্পিউটার ইন্সট্রাকটর আমাকে 'শুয়োরের বাচ্চা ' বলেছে। এখন থুম হয়ে বসে আছি।'শুয়োরের বাচ্চা ' বলে যে সে আমার বাবাকে বা মাকে অপমান করেছে,এইরকম ফালতু ধারণা আমার মাথায় আসে নি।বাবা/মা- কে অপমান করলে যে আমি উত্তেজিত হয়ে যেতাম তেমনও না।অপ্রয়োজনে গালি দিলে আমি রাগি না। আর বাবা-মা তুলে গালি দিলে মা/বাবার অপমান কল্পনা করে আমি যত না উত্তেজিত হই, তার থেকে নিজেকে অপমান করলেই বেশি খারাপ লাগে।সেটাই সকলের হয়।এদিকে,মানে আমার স্কুলটা যে গ্রামে সেখানে অবশ্য ব্যাপার আলাদা।এরা 'বাপ তুললি কেন?' বলে নিজের অপমানেই আসলে আকুল হয়। 'বাপ তোলা'ব্যাপারটা জুড়ে একটা সিমপ্যাথি আদায় করতে চায়। এরা জানেই না যে এরা আসলে একটা মিথ্যে সেন্টিমেন্টে জড়িয়ে আছে। এদের কথা ভেবে আমার অবাক লাগে। কষ্টও হয়।সে যাই হোক।এখন আমি বসে বসে ভাবছি যে মানুষটা হঠাৎ আমায় 'শুয়োরের বাচ্চা' বলল কেন।দোষ একটা আমি করেছি বটে। কিন্তু সেটা দোষের কিছু না।বরং একটা বাস্তব কথা সপাটে বলেছি।এই যে প্রথম বলেছি তা নয়। আগেও একবার বলেছি।সেদিন সে চুপ করে শুনেছে।কী বলতে হবে তখন সে জানতো না।তাকে পরে স্কুলেরই কোন মাস্টার এবং তার সঙ্গে তার রাজনৈতিক দলের পাণ্ডারা শিখিয়ে দিয়েছে কী বলতে হবে।তাই সে বলেছে।আমি ভাবছি ছেলেটার কথা।বেচারি,এই ২৫/২৬ বছর বয়সেও সে নিজের কথা নিজে বলতে পারে না।কাউকে বলতে হয়,'আমায় বললে,আমি এই বলতাম',তবে সে বোঝে কী বলতে হবে।  যে বলেছে সে কী বলত, সে আমার সঙ্গে দিব্যি কথাবার্তা বলে।কিন্তু তার একটা রাগ আছে আমার ওপর। একবার সে আমার সঙ্গে কথা বন্ধ করেছিল।কী কারণে মনে নেই,তবে কারণটা যে অকিঞ্চিৎকর সেটা মনে আছে।তার মান ভাঙ্গানোর জন্যেই মজা করে তাকে একটা ছড়া লিখে দিয়েছিলাম। ছড়াটা সকলের জানা।কিন্তু ভাষাবিভাগের মাস্টার যে সুকুমার রায় না পড়েই চাকরি পেয়ে বসে আছে আমি জানতাম না। আপনারা নিশ্চয় এতক্ষণে আন্দাজ করে ফেলেছেন, আমি কী লিখেছিলাম। লিখেছিলাম,'রামগড়ুরের ছানা/হাসতে তাদের মানা? ' সে এতে বেজায় ক্ষুব্ধ কারণ এই লেখায় নাকি তার বাপ তোলা হয়েছে! অনেক্ষণ সত্যিই আমি হতবুদ্ধি হয়ে গিয়েছিলাম। এমন একটা ছড়াকে যে এইভাবে কেউ ইন্টারপ্রিট করতে পারে এর আগে আমি সেটা ভাবতেও পারি নি।
সেই মাস্টারকে এরপর থেকে শিক্ষক মনে করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সে-ই এই ছেলেটাকে উস্কেছে।আমার সামনেই উস্কেছে। কী বলেছিলাম ছেলেটাকে? তার ভা,জ,পা - মার্কা গোমাতার গুণকীর্তন শুনতে শুনতে উত্তেজিত হয়ে বলেছিলাম,'বোঝাই যাচ্ছে গোরু তোমাদের মা' । এবং আবারও আমি বাপ/মা তুলে ফেলেছি। আমি থুম হয়ে বসে আছি।ভাবছি, এরা সব স্কুলে পড়াতে আসে! কী পড়ায় এরা! ভাবছি, আমার শিক্ষকের কথা। কী শেখালেন তিনি?

  হ্যাঁ। আমার শিক্ষকের কথা আজ খুব মনে পড়ছে। একসময় মফস্বলের একটা খুব নামকরা স্কুলে ৮ বছর কাটিয়েছিলাম আমি। ছোটবেলায় ক্লাস ৪ পর্যন্ত  যেমন বছর বছর ফার্স্ট হতাম, তেমন না হলেও এখানেও আমি খুব ভালো ফল করতাম। মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও ফল বেশ ভালো। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাতেও নয় নয় করে বেশ ভালোই নাম্বার পেলাম। পড়তে গেলাম কম্পিউটার সাইন্স।কিন্তু ততদিনে আমি জেনে ফেলেছি যে এতদিন কিছুই পড়িনি আর শিখি নি আমি।পড়া আর শেখার জগতটা আসলে  বিছিয়ে রয়েছে সিলেবাসের বাইরে। ততদিনে পড়ে ফেলেছি একরাশ রবীন্দ্রনাথ, ধূসর পাণ্ডুলিপি,বনলতা সেন,সাতটি তারার তিমির,নীরা আর জয় গোস্বামী।দুপুরের কড়া রোদ উপেক্ষা  করে কলেজ- স্ট্রিটের গলিতে গলিতে খুঁজে বেড়িয়েছি 'উন্মাদের পাঠক্রম'। এরপরে কম্পিউটার সাইন্স? পালালাম।সেই আমার পালানোর শুরু আর শেখার শুরু।শিক্ষক নিজে এসে আমার হাত ধরলেন।সেই হাত আজও আমায় নতুন নতুন আলোর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাঁর কাছে আমার শেখার শেষ নেই,তাই কৃতজ্ঞতারও শেষ নেই।তিনি আর কেউ না,আমার রাস্তা,আমার পথ।

   'পথ শব্দটির কোন বিকল্প ছিল না, তাই বিপত্তি ঘটেছে'। এইসব বিপত্তিগুলো থেকেই আমার শেখা। জীবনকে লাট্টুর মতো করতলে নিয়ে যদি ঘোরাতে না-ই পারলাম তবে বেঁচে আছি বুঝবো কী করে?তাই রাস্তার হাতে নিজেকে ছেড়ে দিয়েছি।রাস্তা,মানে আমার শিক্ষক, আমায় বিচিত্র সব ছবির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করেছে,'এবার?' কী করব ভাবি না,কী করতে পারতাম ভাবতে শুরু করেছি।জীবনটা যা, তা-ই দেখতে চাই নি কোনদিন,জীবনটা যা হতে পারতো, কিম্বা হতে চাইছে, সেটা দেখতে চেয়েছি। সেই দেখাটার কথাও রাস্তাই আমাকে শিখিয়েছে। এই যে পথের কাছ থেকে শিখতে শেখা,এটার কথা আমরা বেদান্তেও পাব কিন্তু।দত্তাত্রেয়র কথা ভাবুন।তিনি একদিন রাস্তায় যেতে যেতে লক্ষ করলেন কয়েকজন বারাঙ্গনা পথে দাঁড়িয়ে রয়েছে খদ্দেরের অপেক্ষায়।  তার মধ্যে পিঙ্গলা নামের একটা মেয়েও ছিল।তিনি,দত্তাত্রেয় দূরে দাঁড়িয়ে লক্ষ করছিলেন। এক এক করে সবাই তাদের খদ্দের পেয়ে যাচ্ছে, কিন্তু পিঙ্গলা পাচ্ছে না। তার হতাশা বাড়ছে।শেষে, সেই রাতে আর কোন খদ্দেরই না পেয়ে পিঙ্গলা ঘরে চলে গেল। দত্তাত্রেয় পিঙ্গলার ঘরের জানলা দিয়ে কিছুক্ষণ পর উঁকি দিয়ে দেখলেন,পিঙ্গলা ঘুমোচ্ছে।


মনে হচ্ছে হতাশা তাকে সুখে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।দত্তাত্রেয় লিখলেন,' নৈরাশ্য সুখং পিঙ্গলাবৎ'। হ্যাঁ,এভাবেই পথ দত্তাত্রেয়কে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিতে শিখিয়েছিল। শাস্ত্রে বলে 'মহাজন যেন গতঃ,সঃ পন্থা'। আমার রাস্তা বলে, আমি অন্যের দেখানো পথে ততদূর যেতে পারি যতদূর পথ আমায় নিয়ে যাবে। তারপর যখন পথ থেমে যাবে তখন আমি সেই রাস্তার উপরে আর দাঁড়িয়ে থাকবো না।যখনই বুঝব, একই ধুলো,একই মাটির পৌনঃপুনিকতা ছাড়া রাস্তা আর কিছু দিচ্ছে না আমায়,তখন, একেবারে তখনই নিষ্ঠুর ইরেজার দিয়ে মুছে দেব পথ।আবার বাঁক নেব। নতুন রাস্তার নতুন শিখন-অভিজ্ঞতায় ঠেলে দেব দ্বিধাহীন আমার পথচলাকে। এই শেখার পদ্ধতিটার মধ্যে একটা বেদনা আছে।কিন্তু 'জানিবার গাঢ় বেদনার ভার', না বইতে পারলে শেখার, দেখার বহুবর্ণের সম্ভবনার তিরগুলো ভোঁতা হয়ে যায়।  মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় একবার সমরেশ বসুকে বলেছিলেন,' লিখতে যখন এসেছ, তখন যাপনটাও দরকার, বুঝলে?একটা মাটির সরা নেবে।  তাতে ভাত ফুটিয়ে খাবে।তারপর নির্দয়ভাবে সেই সরাটা ভেঙে দিয়ে হাঁটা দেবে'। এই হচ্ছে শিক্ষা।একজন অগ্রজ এক অনুজ লেখককে এভাবেই শেখাচ্ছেন। হ্যাঁ,এই নির্দয়ভাবে সরাটা ভেঙে ফেলার জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে শিখিয়েছে আমার রাস্তা।  সে আমাকে ঘুমের ভিতরে টান দেয়।স্বপ্ন দেখায়।স্বপ্ন দেখানোর স্বপ্ন।

 আমার জীবনের রাস্তা সবসময়ই আমার সঙ্গে বন্ধুর মতো মজা করেছে।কখনো কান ধরে টান দিয়েছে,আবার কখনো  মাথায় চাঁটি মেরে বসিয়েও দিয়েছে। আমি তাকে এড়াতে পারি না। ওই ধমকগুলো কোন সামান্য মাস্টারি ধমক হয়েই থাকে না যে! হ্যাঁ,আমি মাস্টারদের শিক্ষক বলতে দ্বিধাবোধ করি। মাস্টার বললেই প্রভুর মতো মনে হয়।কিন্তু দুঃখ হলো, এই বাংলার স্কুল - কলেজে সচরাচর যেসব মাস্টারদের দেখা পাওয়া যায় তারা প্রভুও নয়,শিক্ষক  তো দূরস্থান ঠিকঠাক ফেসিলিটেটারও না। তাদের অবশ্য এমনটাই হওয়ার কথা।কারণ, রাষ্ট্র তাদের কাছে ঠিক এমনটাই প্রত্যাশা করে।  অনুসন্ধানী মানসিকতাকে গাছের আগায় ঝুলিয়ে রেখে এরা আসলে যেটা শেখাতে আসে, সেটা হল ' কী করে চাকরি করিব।' আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাই তো এইরকম। আমরা পড়াশোনা করি ডিগ্রি পাবার জন্যে। ডিগ্রি পাই চাকরি পাবার জন্যে। চাকরি পাই বিবাহ করার জন্যে।বিবাহ করি সন্তান উৎপাদনের জন্যে। সন্তান উৎপাদন করি প্রতিপালনের জন্যে।প্রতিপালন করি বৃদ্ধবয়সের অবলম্বনের জন্যে। তারপর মৃত্যু আসে।সমাজ সফল জীবনের হাই তুলতে তুলতে খই ছড়ায়। তারপর দশদিন প্রতিপালিত সন্তান কুশাসনের খোঁচায় পিছনে চুলকুনি অনুভব করলে দু-একবার আমাদের কথা মনে করে। এবং সর্বশেষে ভুলে যেতে হয় বলে ভুলে যায়। এই ছক ক্রমাগত আমাদের গোল্লাছুটের মতো দৌড় করায়।ছক ভাঙার বিস্তর ব্যথা। 'জানিবার গাঢ় বেদনার ভার' অকারণ মাস্টারেরা চাপাতে যাবেই বা কেন আর চাপাতে গেলে ছাত্রী - ছাত্রেরা সেটা মাথায় তুলে নেবেই বা কেন?তারা তো জানে মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নিতে হবে।এখন মা যদি সূক্ষ্ম বস্ত্র দেয় তাহলে কী করতে হবে কবি তো বলে নি!!  যাই হোক, এইরকম মাস্টারদের মধ্যে কিন্তু আমিও একজন।পালাতে পালাতে শেষে ধরা পড়ে যাওয়া কয়েদির মতো এখন নিজেই নিজের খোঁড়া কুয়োয় পড়ে কাতরাচ্ছি। মাস্টারের আসন ছেড়ে মাঝেমধ্যে শিক্ষকতা করার অভিপ্রায় নিয়ে খলবল করে উঠি,অমনি ব্যবস্থার ড্যাঁঙস ধড়াম করে মাথায় এসে পড়ে। থেঁতলে গিয়ে হুঁকোমুখো- হ্যাঁংলা ব'নে যাই, আর সর্বক্ষনের হাসিমুখে দুই ল্যাজে নিরন্তর মাছি তাড়াতে থাকি।স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্ত হই।রাস্তার ধুলোয় পালাতে চাই, আর একটার পর একটা পালক গজিয়ে ওঠে আবার।আবার ওড়ার স্বপ্ন। আর পলায়ন।আর ছুটি চলে যাওয়া। আর মাইনে কাটা যাওয়া। আর হতাশার টাওয়ার থেকে ডানা মেলে আকাশপথে হারিয়ে যেতে চাওয়া।এই সব সময়ে রাস্তাই আমাকে রাস্তা চেনায়।

      রাস্তাকে শিক্ষক হিসেবে পেয়ে আমার যার - পর- নাই মজা হয়েছে।বই পড়ে অনেক পণ্ডিতি করার ব্যাদড়া বদভ্যাস যে আমার মন থেকে মুছে গেছে একথা বলব না।তবে বই পড়ার অভ্যাসে ঢুকে পড়েছে বিসদৃশ এক গুবরেপোকা। সে বই - এর পাঠাভ্যাসকে উল্টোদিকে উপুড় করে ভাবতে বাধ্য করেছে। ন্যায় আর নীতির একরৈখিক ধারণা থেকে বার করে নিয়ে এসেছে। আমার হাতে রাস্তা তুলে দিয়েছে একটা কয়েন।সেই কয়েনের একদিকে ন্যায় আর অন্যপিঠে অন্যায়।একপিঠে সত্য আর অন্যদিক মিথ্যার।কয়েনটা টস করার মতো শূন্যে ছুঁড়ে দিলেই সেটা ঘুরপাক খেতে থাকে।আর ঘোরার সময় ন্যায় আর অন্যায় সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। মনে হয় আমার রাস্তাও তো ওই কয়েনটার মতোই শূন্যে ঘুরপাক খাওয়া পৃথিবীর মাটি আঁকড়ে ধরে প্রবলতর বেগে ঘুরপাক খাচ্ছে নিয়ত।যে কেউ একটু বাইরে থেকে দেখলেই বিভ্রান্ত হবে না? ন্যায়কে কখনো অন্যায় দেখবে আর অন্যায়কে ন্যায়। সত্য মুহূর্তে পালটে যাবে না,মিথ্যায়? এক পণ্ডিত শ্রোতা আইনস্টাইনের বক্তৃতা শুনতে শুনতে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,' হে পণ্ডিত-প্রৌঢ়, আপনি তো অন্তত এটা স্বীকার করবেন যে ২+২= ৪। ' আইন্সটাইন হাসতে হাসতে বললেন ' হ্যাঁ,তবে যদি তারা গতিশীল না হয়'। তার মানে? তার মানে আমার রাস্তা, যে কিনা গতিশীল, সেখানে দুইয়ে দুইয়ে চার হয় না। এই অনিশ্চিতের খেলাটাই আমায় শেখায়।রাস্তাকে আমি চালাই না,চালাতে চাইও না।রাস্তা চলে আর আমি তার অনুগমন করি।আমি শুধু আমার দশটা ইন্দ্রিয়ের জানলা - দরজাগুলো খুলে রাখতে চাই।সেখান দিয়ে রাস্তার ধুলোমাখা বাতাস এসে ধূসর করে দেয় আমাকে।সাদা আর কালোর মধ্যবর্তী এই ধূসরতায় রাস্তার পাশের পুকুরের জলে চোখ রাখি।পুকুরের জলে বাতাস ধাক্কা দিচ্ছে। ছোট ছোট ঢেউ খেলা করছে বাতাসে।পুকুরের উপর কারা যেন টনিয়ে দিয়েছে লম্বা লম্বা দড়ি।  দড়ির ছায়া ঢেউয়ের উপর পড়ে বক্ররেখায় দুলছে।আমি দেখতে থাকি।দেখতে দেখতে মনে হয় দড়িটা তো স্থির সরলরেখায় টাঙানো। আর আমি যে ছায়াকে দেখছি তাকে মনে হচ্ছে গতিশীল বক্ররেখা।তবে ছায়াটুকু যদি কখনো চোখে পড়ে, আমি তো ধরতে পারব না দড়ির আসল রূপ! তাহলে এই প্রকৃতি?  সে তো পরমের ছায়ামাত্র। এই প্রকৃতিকে দেখে কিকরে আন্দাজ করব সত্যের প্রকৃত রূপ। রাস্তা আমায় এমন কিছু কি দেখাতে পারবে যা  আমায় চিরন্তনের কাছে নিয়ে যায়?  ভাবতে ভাবতে মুছে ফেলি যাত্রাপথ, ইরেজার দিয়ে যেভাবে ক্যানভাস থেকে মুছে দিতে হয় অতৃপ্তির ছবি।আবার নতুন রাস্তা এসে ডেকে নেয় আমায়। নতুন রাস্তায় আবার শুরু হয় দিনরাতের চক্রপথ ছাড়িয়ে শেষ অন্তহীনের খোঁজ। জীবনকে আড়াআড়ি পেরিয়ে গিয়ে জীবনের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা অন্ধকার আমার গন্তব্য।অন্ধকার ভেদ করে বুনোপথের দুর্গমতা আমার নিয়তি। দুর্গমের গম্যতাই আমার শিক্ষা। যা কিছু অসম্ভব তাকে স্বপ্নে ধরার অভিপ্রায় আমার শিক্ষা।সেই শিক্ষার তুষেরআগুন যে উস্কে দেয় সেই পথ
 আমার সাথী, আমার একান্ত শ্রদ্ধেয় শিক্ষক।

2 comments:

একনজরে

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"ইস্কুল বলিতে আমরা যাহা বুঝি সে একটা শিক্ষা দিবার কল। মাস্টার এই কারখানার একটা অংশ। সাড়ে দশটার সময় ঘণ্টা বাজাইয়া কারখানা খোলে। ...